۲ آذر ۱۴۰۳ |۲۰ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 22, 2024
এরদোগান  ও মুসলিম দেশগুলোর শাসনকর্তারা কী করছে ?
এরদোগান ও মুসলিম দেশগুলোর শাসনকর্তারা কী করছে ?

হাওজা / তুর্কিয়ে , কাতার ও আমিরাতের মার্কিন ঘাঁটি গুলো থেকে ৪০ টা পরিবহণ ফ্লাইট ( প্রতি ফ্লাইটে ৭৭ টন বোমা ও গোলাবারুদ) ইসরাইলে বোমা ও গোলাবারুদ নিয়ে গেছে । জর্দান থেকেও গোলাবারুদ ও বোমা ইসরাইলে পাঠানো হয়েছে।

মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, তুর্কিয়ে , কাতার ও আমিরাতের মার্কিন ঘাঁটি গুলো থেকে ৪০ টা পরিবহণ ফ্লাইট ( প্রতি ফ্লাইটে ৭৭ টন বোমা ও গোলাবারুদ) ইসরাইলে বোমা ও গোলাবারুদ নিয়ে গেছে । জর্দান থেকেও গোলাবারুদ ও বোমা ইসরাইলে পাঠানো হয়েছে।

এখনও তুর্কিয়েহ থেকে খাবার ও বোটলড ওয়াটার ইসরাইলে যাচ্ছে । খাবার ও রসদপত্র বাহী জাহাজ তুর্কিয়েহ থেকে এখন ইসরাইলের হাইফা বন্দরে লঙ্গর করে আছে মাল খালাসের অপেক্ষায় । এখনও ইসরাইলের সাথে তুর্কিয়েহর কূটনৈতিক , বাণিজ্যিক , সামরিক ও গোয়েন্দা সহযোগিতা রয়েছে এবং তুর্কিয়েহ এ সব সম্পর্ক ছিন্ন করে নি ।

তুর্কি জনগণের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য হামলার ভয়ে ইসরাইল নিজেই তার দূতাবাসের লোকদের সরিয়ে নিয়েছে। তুর্কিয়ের এরদোয়ানের উচিত ছিল ইসরাইলী রাষ্ট্রদূতকে আঙ্কারা থেকে বহিষ্কার ও ইসরাইলী দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া। অথচ এরদোয়ান তা করে নি ।

খ্রিষ্টান দেশ কলম্বিয়ার পর অপর এক খ্রিষ্টান দেশ বলিভিয়া গাযায় গণহত্যার প্রতিবাদে ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। চিলিও গাযায় গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের প্রতিবাদে ইসরাইলী রাষ্ট্রদূতকে সেদেশ থেকে বহিষ্কার করেছে।

মুনাফিকের ভূমিকা পালন কারী এরদোয়ান , মিশরের ছিছি , আরব আমিরাতের রাজা , আযারবাইজানের ইলহাম আলিয়েভ , বাহরাইনের রাজা , জর্দানের পাদশাহ আব্দুল্লাহ তা করার সাহস পায় নি । অতএব এই মুনাফিক সদৃশ রাষ্ট্র নায়ক ও রাষ্ট্র প্রধান গাযায় গণহত্যায় ইসরাইলের সঙ্গী ও দোসর । এই মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্রনায়করা কত জঘন্য নালায়েক ( অযোগ্য ) বিপজ্জনক বিশ্বাসঘাতক ও গাদ্দার !!

সৌদি আরব তো তলে তলে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ৭ অক্টোবরের তূফানুল আকসা অভিযানের প্রবল ঝড়ে পড়ে সেই প্রক্রিয়ায় ভাটা পড়েছে। কিন্তু শোনা যাচ্ছে যে গাযা ইসরাইল যুদ্ধ শেষ হলে ইসরাইলের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হবে !!! সত্যিই মুসলিম দেশ গুলোর কী করুণ দুর্দশা !!!

কিভাবে এ সব মেরুদন্ড বিহীন তথাকথিত মুসলিম রাষ্ট্র প্রধান ও রাষ্ট্র নায়ক ফিলিস্তীনী মুসলিমদের গণহত্যার নায়ক যুদ্ধাপরাধী জবরদখল কারী ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়ে এই যালেম পতন মুখ মেকি কৃত্রিম সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটির সাথে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও সামরিক সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে ? এ সব তথাকথিত মুসলিম রাষ্ট্র প্রধান ও রাষ্ট্র নায়ক আসলে ইসরাইল ও পশ্চিমাদের বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আজ্ঞাবহ দাস এবং এদের কোনো স্বাধীন স্বতন্ত্র নীতি অবস্থান নেই । উচিত ছিল এ মুসলিম দেশগুলোর সরকার সমূহের একযোগে শক্ত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

পশ্চিমাদের ওপর তেল অবরোধ আরোপ এবং তেল রপ্তানি বন্ধ রাখা। ইসরাইলের হুমকি উপেক্ষা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চোখ রাঙানির পরোয়া না করে গাযায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো এমনকি ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে হলেও।

সকল মুসলিম দেশ মিলে পশ্চিমাদের বয়কট করা । ব্যস তাহলে ইসরাইল ও তার পৃষ্ঠপোষক পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভালোভাবে জব্দ হত এবং ইসরাইলকে গাযায় এ সব যুদ্ধাপরাধ করার সবুজ সংকেত দিতে পারত না । কিন্তু ইরান ও গুটিকতক মুসলিম দেশ ব্যতীত আর কোনো মুসলিম দেশ গাযা প্রসঙ্গে বলিষ্ঠ ভূমিকা নিতে পারে নি।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গতকাল ( মঙ্গলবার ) বলেছে : ইসরাইল গাযায় যে স্থল হামলা ও অভিযান শুরু করেছিল তা বহু ভারী মূল্য দেওয়ার পর বন্ধ করা হয়েছে। তবে ইসরাইলই বিজয়ী !!!

উত্তর ও উত্তর পূর্ব গাযায় ইসরাইলী সেনাবাহিনী যে স্থল অভিযান শুরু করেছিল গত দুই তিন ধরে গত পরশু ১০ টি এবং গতকাল ২২ টি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান হারিয়ে তা ব্যর্থ হয়েছে। আজ ইসরাইলী সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে গাযায় গতকাল ও আজ মোট ১৩ জন ইসরাইলী সৈন্য নিহত হয়েছে । তবে এ সংখ্যা নিহত সৈন্যদের প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক কম । খুব শক্তভাবে সেন্সরশিপ আরোপ করেছে ইসরাইল যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে যাতে ইসরাইলীদের মনোবল ভেঙে না পড়ে ।

উত্তর গাযা বালুকাময় সেখানে খেত খামারও কম । লোক বসতিও কম । জাবালিয়া এলাকায় অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ( ইসরাইল ) উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন শহর ও গ্রাম থেকে বলপূর্বক উচ্ছেদ কৃত ফিলিস্তীনীরা জাবালিয়া উদ্বাস্তু ও শরণার্থী ক্যাম্প সমূহে ৭৫ বছর যাবৎ মানবেতর জীবন যাপন করছে। এখানেই ইসরাইল গতকাল ৬ টন বোমা বর্ষণ করেছে।পুরো মহল্লা তারা ধ্বংস করেছে। ২০ টা টাওয়ার পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে প্রাথমিক ভাবে ৪০০ জনের শাহাদাত সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে । শহীদদের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি ।

ইসরাইলী সৈন্যরা গাযার এ অংশে প্রবেশ করে গোলক ধাঁধায় পড়ে যায়। তারা বুঝতে পারছিল না যে এর পর তাদের কী করতে ও কোথায় কোথায় অভিযান চালাতে হবে ?! যেহেতু আগে হামাস ও অন্য সকল ফিলিস্তিনি গ্রুপ এই স্থানে ( উত্তর গাযায়) সামরিক প্রশিক্ষণ ও ড্রিল করত সেহেতু ইসরাইলের ধারণা ছিল যে এখানেই হামাস ও ফিলিস্তিনী মুহাজিদদের মাটির নীচের টানেল আছে । ব্যস টানেল গুলো বের করে সেগুলো তারা ধ্বংস করে দেবে বিস্ফোরক ফাটিয়ে বা সমুদ্রের পানি প্রবাহিত করে অথবা নিষিদ্ধ শ্বাসরোধ কারী গ্যাস ( নার্ভ গ্যাস ) টানেল গুলোতে প্রয়োগ করে । কিন্তু তারা বাস্তবে সেই টানেল গুলো খুঁজে পায় নি এবং সেগুলো ধ্বংসও করতে পারে নি ।

ওদিকে হামাসের যোদ্ধা ও ফিলিস্তিনী মুহাজিদরা ইসরাইলী সৈন্যদের অগোচরে টানেল থেকে হঠাৎ করে বের হয়ে এসে ইসরাইলী সেনাদের বধ করে ইসরাইলী ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানে ক্ষেপনাস্ত্র, বোমা ও রকেট ছুড়ে ধ্বংস করে আবার টানেল পথে অদৃশ্য ও গায়েব হয়ে যায় । তাই ইসরাইল এ কয়দিনে স্থল হামলা চালিয়েও টিকতে পারে নি ।

এখন দক্ষিণ গাযায় ফিলিস্তিনি মুজাহিদ দের সাথে ইসরাইলী সেনাবাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে । যুদ্ধের ময়দানে ইসরাইলী সেনাবাহিনীর সফলতা নেই। তাই রণাঙ্গনে ব্যর্থতার প্রতিশোধ গাযার নিরীহ ফিলিস্তীনী জনগণের ওপর নির্বিচারে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বোমা হামলা করে নিচ্ছে ইসরাইল।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .